সোমবার, ১৬ Jun ২০২৫, ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ভোলায় ঈদ উপহার খাসি না পাঠানোয় মেয়েকে নির্যাতন, শঙ্কায় বৃদ্ধা মা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিএনপি নেতা আব্দুল লতিফ সম্রাটের ওপর নড়াইলে সন্ত্রাসী হামলা: বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি অধ্যাপক বি.এম. নাগিব হোসেনের ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করলেন প্রধান উপদেষ্টা তারেক রহমানের দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাল টাকায় গরু বিক্রি করা সেই বৃদ্ধকে ওমরাহ করাতে চান অপু বিশ্বাস হাইওয়ে পুলিশের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন কৃষি জমিতে বিলবোর্ড অপসারণের নির্দেশ উপদেষ্টার বেলকুচিতে বাইক কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ৪ গুম এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে সকল শহীদ পরিবারের পাশে রয়েছে বিএনপি: আমিনুল হক
নিজের পাতা ফাঁদে পড়ে অভিশংসনের মুখে ট্রাম্প

নিজের পাতা ফাঁদে পড়ে অভিশংসনের মুখে ট্রাম্প

ভিশন বাংলা ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রস্তাব উঠেছে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে। অর্ধেকেরও বেশি আইনপ্রণেতা তার বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রস্তাবে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। কিছু বিষয় স্পষ্ট হলে যে সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রেসিডেন্টকে ইমপিচমেন্ট বা অভিশংসনের ঘটনা বিরল। তবে ট্রাম্পকে অভিশংসনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করেছে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ। আগামী নির্বাচনে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য বিদেশি শক্তির সাহায্য নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

অভিশংসনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হ্রাস করা ছাড়াও দেশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হয়। বেশকিছু অপরাধের কারণে প্রেসিডেন্টকেও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। এমনকি প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অপসারণ করার ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে মার্কিন সংবিধানে।

নির্বাচন নিয়ে শুরু থেকেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ উঠেছে। প্রথম অভিযোগ ওঠে নির্বাচনে জয়ী হতে রাশিয়ার সঙ্গে গোপনে আঁতাতের কথা। যা গত দুই বছর ধরে তদন্তাধীন। এমন অবস্থায় নতুন করে তার বিরুদ্ধে ফের আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বিদেশি শক্তির সহায়তার গুঞ্জন উঠেছে।

ফলে, ট্রাম্পকে অভিশংসনের মুখোমুখি করাতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিরোধী শিবির। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে, নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রেসিডেন্টের পদ হারাতে হবে ট্রাম্পকে। তবে সেজন্য কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের সমর্থন লাগবে যা ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানের দখলে।

কী তদন্ত করা হচ্ছে?
২০২০ সালের নির্বাচনে বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার ছেলে ইউক্রেনের তেল কোম্পানির একজন পরিচালক। ট্রাম্প বাইডেনের ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে চাপ দিয়ে ফাঁদে পড়েছেন।

যদি তা না করা হয় তাহলে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেয়া বন্ধ করে দেয়ারও হুমকি দিয়েছিলেন বলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কিকে তিনি ফোনে এমন হুমকি ও চাপ দিয়েছেন। সেই খবর ও কথোপোকথন সম্পর্কে জানার পর কংগ্রেস এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।

জো বাইডেন সম্পর্কিত ক্ষতিকর তথ্য তার বিরুদ্ধে কাজে লাগানোর জন্য তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট চাপ দিয়েছেন। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফোনে কথা বলার কথা স্বীকার করলেও তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নাকচ করে অভিশংসন প্রস্তাব দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে বলে কংগ্রেসের নিন্দা করেছেন।

ট্রাম্প বলছেন, ‘ভুয়া খবর ছড়ানো গণমাধ্যম বলছে আমি নাকি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে টেলিফোনে কমপক্ষে আটবার চাপ দিয়েছি। যার কাছে থেকে এসব কথা এসেছে তিনি আলাপের বিষয়ে সরাসরি কিছু বলতে পারেননি। এটি ডেমোক্র্যাট আর গণমাধ্যমের পাতানো চাল।’

প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, ‘নিজের রাজনৈতিক সুবিধার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন কাজ করেছেন। তাকে অবশ্যই এর জবাব দিতে হবে। কেননা তিনি আইন লঙ্ঘন করেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনেও গাফিলতি করেছেন।’

স্পিকার আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট তার সাংবিধানিক দায়িত্ব ভঙ্গ করে এবং আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু নির্বাচনী প্রক্রিয়া ক্ষুন্ন করে তার রাজনৈতিক লড়াইয়ে বিদেশি সরকারের সহায়তা চেয়েছেন। এটা কোনোভাবেই হতে দেয়া যায় না, তাকে জবাবদিহি করতে হবে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন।’

মার্কিন গণমাধ্যমের খবর, ফোনালাপ শুরুর আগে ট্রাম্প তার ভারপ্রাপ্ত দফতর প্রধানকে ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা অন্তত এক সপ্তাহ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। গত মঙ্গলবার ট্রাম্প নিজেও নিশ্চিত করেছেন, ইউক্রেনকে দেয়া সামরিক সহায়তা সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে।

জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেন ইউক্রেনের মালিকানাধীন গ্যাস কোম্পানি ইউক্রেন ওলিগার্কের একজন পরিচালক। গত ২৫ জুলাই ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট সঙ্গে ট্রাম্পের একটি দীর্ঘ ফোনালাপ হয়। গোয়েন্দা সংস্থার একজন সদস্য আনুষ্ঠানিক অভিযোগ তোলার পর এই বিতর্ক সামনে আসে।

দেশটির আইন অনুযায়ী, কোন ‘হুইসেলব্লোয়ার’ বা তথ্য ফাঁসকারীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য সাত দিনের মধ্যে কংগ্রেসের ইন্টেলিজেন্স কমিটির কাছে দিতে হবে। কিন্তু সেটি করা হয়নি। বরং ম্যাগুইয়ার একজন আইনজীবীর সাথে কথা বলেন।

নিউ ইয়র্কের টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ওই আইনজীবী বিষয়টি ততটা ‘গুরুতর’ নয় বলে উল্লেখ করেছিলেন। ফলে ম্যাগুইয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিষয়টি কংগ্রেসের ইন্টেলিজেন্স কমিটির কাছে তোলার মতো নয়।

তবে গত ৯ সেপ্টেম্বর সেটি উল্লেখ করলেও কমিটিকে বিস্তারিত বলেননি তিনি। যদিও ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের ওই ফোনালাপের বিস্তারিত জানার জন্য কমিটির সামনে হট্টগোল করেছিলেন। শুরুতে সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। তবে পরে ট্রাম্প পুরো কথাবার্তা প্রকাশ করার ব্যাপারে অনুমোদন দেন।

ভালো লাগলে নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2011 VisionBangla24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com